ফরেক্স মার্কেটে যত রকমের reversal pattern ব্যবহার করা যায়, তার মধ্যে rising wedge এবং falling wedge আমার সবচেয়ে প্রিয় প্যাটার্নগুলোর মধ্যে দুটি।
এই প্যাটার্নগুলো ট্রেডারদের জন্য বিশাল মুনাফার সুযোগ তৈরি করতে পারে, এবং যারা ধৈর্য সহকারে এগুলো ব্যবহার করেন, তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট এন্ট্রি পয়েন্ট প্রদান করে।
কেন এই wedge প্যাটার্নগুলো বিশেষ?
এই ধরনের wedge প্যাটার্নের একটি দারুণ দিক হলো—এগুলো সাধারণত এমন কিছু স্পষ্ট ও সহজে চিহ্নিতযোগ্য লেভেল তৈরি করে, যা আমাদের মতো price action ট্রেডারদের কাজ অনেক সহজ এবং লাভজনক করে তোলে।
চলুন শুরুতে এদের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখি।
Wedge প্যাটার্নের বৈশিষ্ট্যসমূহ
Rising wedge এবং falling wedge প্যাটার্নগুলো মূলত সেই breakout strategy-তে ব্যবহৃত প্যাটার্নের মতোই, তবে এদের একটি নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা (directional bias) থাকে—যা এগুলোকে bullish বা bearish অর্থ বহনকারী করে তোলে।
তাই এদের জন্য একটি আলাদা পাঠ প্রাপ্য।
গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:
- এই wedge প্যাটার্নগুলো প্রায়ই বাজারে একটি সম্ভাব্য রিভার্সাল এর ইঙ্গিত দেয়।
- অন্যান্য wedge প্যাটার্নের মতো, এগুলোর গঠন ঘটে একটি কনসলিডেশনের সময়, যেখানে bull এবং bear-রা নিজেদের জায়গা পাকা করার চেষ্টা করে।
- এই প্যাটার্নগুলো যেকোনো সময়সীমা জুড়ে তৈরি হতে পারে—দিন, মাস এমনকি বছরব্যাপী।
- একটি সাধারণ নিয়ম হলো—যত দীর্ঘ সময় ধরে প্যাটার্নটি গঠিত হয়, পরবর্তী ব্রেকআউট ততটাই শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
Rising Wedge কী?
নাম থেকেই বোঝা যায়, rising wedge প্যাটার্নটি উপরে দিকে ঢালু এবং এটি সাধারণত একটি topping pattern হিসেবে দেখা হয়—
অর্থাৎ, এই প্যাটার্ন গঠনের পর বাজার নিচের দিকে ব্রেক করে।
নিচের চিত্রে একটি rising wedge-এর বৈশিষ্ট্য দেখানো হয়েছে।
লক্ষ্য করুন, rising wedge তখনই তৈরি হয় যখন বাজার ক্রমাগত higher high এবং higher low তৈরি করতে থাকে।
- সবগুলো high পয়েন্ট এমনভাবে অবস্থান করতে হবে যেন সেগুলোকে একটি ট্রেন্ডলাইন দিয়ে সংযুক্ত করা যায়।
- একই নিয়ম প্রযোজ্য low পয়েন্টগুলোর ক্ষেত্রেও।
- যদি high এবং low পয়েন্টগুলো এক লাইনে না থাকে, তাহলে সেটিকে আর valid rising wedge ধরা যাবে না।
চূড়ান্তভাবে, যেহেতু উপরের ও নিচের ট্রেন্ডলাইন দুটি সমান্তরাল নয়, তাই একে terminal pattern ধরা হয়—
অর্থাৎ, এই প্যাটার্নটির একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে গিয়ে শেষ হতেই হবে।
Falling Wedge কী?
Falling wedge হলো rising wedge-এর ঠিক উল্টো। এখানে bear-রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং বাজার lower high এবং lower low তৈরি করতে থাকে।
এই কারণে, falling wedge প্যাটার্ন সাধারণত উর্ধ্বমুখী ব্রেকআউট (break to the upside) হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।
নিচের চিত্রে একটি falling wedge-এর বৈশিষ্ট্যগুলো দেখানো হয়েছে।
উপরের চিত্রে আমরা একটি consolidation period দেখতে পাই, যেখানে bear-রা স্পষ্টভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আমরা তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কারণ বাজার lower high এবং lower low তৈরি করছে।
লক্ষ্য করুন, কিভাবে সবগুলো high পয়েন্ট একে অপরের সঙ্গে লাইনবদ্ধ এবং একইভাবে low পয়েন্ট-গুলিও।
যদি এই high এবং low-এর উপর একটি পরিষ্কার ট্রেন্ডলাইন টানা না যায়, তাহলে সেই প্যাটার্নটিকে valid wedge pattern ধরা যাবে না।
সবশেষে, একটি valid wedge pattern চিহ্নিত করার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—
উইজের উভয় পাশে অন্তত তিনবার প্রাইস স্পর্শ করতে হবে।
অর্থাৎ,
- মার্কেটকে কমপক্ষে তিনবার সাপোর্ট টেস্ট করতে হবে
- এবং তিনবার রেজিস্ট্যান্স টেস্ট করতে হবে breakout হওয়ার আগে।
না হলে, সেই প্যাটার্নটিকে ট্রেডযোগ্য (tradable) ধরা যায় না।
Breakout ট্রেড করা
আমরা যেমনটা Daily Price Action কৌশলে ব্যবহার করি, ঠিক তেমনি breakout ট্রেডিংয়ের সুযোগ আসে তখনই, যখন বাজার উইজ প্যাটার্নের সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স লেভেল ভেঙে বেরিয়ে আসে।
অনেকের সাধারণ প্রশ্ন:
Breakout ট্রেড করতে গেলে কোন টাইম ফ্রেম ব্যবহার করব?
- ৪ ঘণ্টার ক্লোজ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব,
- না কি শুধুমাত্র ডেইলি ক্লোজ হলে ট্রেড করব?
উত্তর:
এটা নির্ভর করে setup-এর উপর।
যে টাইম ফ্রেমে প্রাইস লেভেলগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে সম্মান (respect) করছে, সেটাই ব্যবহার করা উচিত।
এই বিষয়টি নিয়ে আমরা পরে বিস্তারিত আলোচনা করব।
এখন চলুন দেখি, কিভাবে rising wedge প্যাটার্ন থেকে ব্রেকআউট ট্রেড করতে হয়।
উপরের চিত্রে লক্ষ্য করুন, আমরা বাজারের সাপোর্ট লেভেলের নিচে ক্লোজ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।
এই ক্লোজ প্যাটার্নটি নিশ্চিত করে, তবে শর্ট এন্ট্রি নেওয়া হবে কেবলমাত্র পুরোনো সাপোর্ট লেভেলকে পুনরায় টেস্ট করার পরে।
কেন রিটেস্টের জন্য অপেক্ষা করব?
সহজভাবে বললে,
ভাঙা লেভেলটি পুনরায় টেস্ট করার জন্য অপেক্ষা করলে আপনি একটি আরও ভালো রিস্ক-টু-রিওয়ার্ড রেশিও পাবেন।
এই একই নিয়ম falling wedge-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য—
তবে এবার আমরা বাজারের রেজিস্ট্যান্স লেভেলের ওপরে ক্লোজ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করব,
এবং এরপর সেই লেভেলকে নতুন সাপোর্ট হিসেবে টেস্ট করার বিষয়টি লক্ষ্য করব।
এইভাবে রিটেস্টের পর এন্ট্রি নেওয়া আপনাকে বেশি নিরাপদ এবং লাভজনক ট্রেড নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
লক্ষ্য করুন, আমরা আবারও প্যাটার্নের বাইরে প্রাইস ক্লোজ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি, তারপর এন্ট্রির কথা ভাবছি।
Falling wedge-এর ক্ষেত্রে, এন্ট্রিটি হয় তখন, যখন ভাঙা রেজিস্ট্যান্স লেভেল রিটেস্ট হয়, এবং পরে সেটি নতুন সাপোর্ট হিসেবে কাজ করতে শুরু করে।
যদিও উপরের চিত্রগুলোতে রিটেস্টটি একটু গোলাকৃতি বা ধীরগতির দেখানো হয়েছে, বাস্তবে অনেক সময় ব্রেকআউটের ঠিক পরেই দ্রুত রিটেস্ট হয়ে যায়।
অতিরিক্ত পরামর্শ:
এখানে আরও একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি—
যদি আপনি pin bar এর মতো bullish বা bearish প্রাইস অ্যাকশন সিগন্যাল পান, তাহলে সেটি আপনার সেটআপে আরও বিশ্বাসযোগ্যতা (confluence) যোগ করে।
তবে যদি প্যাটার্নটি খুব সুন্দর এবং স্পষ্ট হয়,
তাহলে শুধুমাত্র রিটেস্ট হওয়াটাই যথেষ্ট হতে পারে ট্রেড নেওয়ার জন্য।
🎯 স্টপ লস কৌশল (Stop Loss Strategies)
এখন পর্যন্ত আমরা শিখেছি:
- কীভাবে rising এবং falling wedge প্যাটার্ন চিহ্নিত করতে হয়
- ব্রেকআউট কনফার্ম করার পদ্ধতি
- এবং কোথায় এন্ট্রি নেওয়া উচিত
এখন চলুন দেখি, কীভাবে আপনি স্টপ লস দিয়ে রিস্ক ম্যানেজ করবেন।
স্টপ লস কোথায় বসাবেন?
একটি সঠিক স্টপ লস লেভেল নির্ধারণ করা এন্ট্রি নেওয়ার চেয়েও একটু জটিল হতে পারে।
কারণ প্রতিটি wedge প্যাটার্নই একে অপর থেকে আলাদা হয়—এদের high এবং low পয়েন্টগুলোও ভিন্ন।
তবে এখানে একটি সোনার নিয়ম সবসময় প্রযোজ্য:
আপনার স্টপ লস এমন জায়গায় বসান, যেখানে পৌঁছালে সেটআপটি “অকার্যকর (invalidated)” বলে বিবেচিত হবে।
এখন চলুন দেখি, rising wedge ব্রেকআউটের পরে স্টপ লস বসানোর সবচেয়ে প্রচলিত জায়গা কোথায় হয়।
নিচের চিত্রে সেটির একটি ক্লোজ-আপ দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
লক্ষ্য করুন, স্টপ লসটি শেষ সুইং হাই (swing high)-এর ঠিক ওপরে বসানো হয়েছে।
এটি করার কারণ হলো —
যদি বাজার এই লেভেলে গিয়ে আমাদের স্টপ লস হিট করে, তাহলে এর মানে বাজার নতুন একটি হাই তৈরি করেছে,
আর সে ক্ষেত্রে আমরা আর এই শর্ট পজিশনে থাকতে চাই না।
আপনি হয়তো ইতোমধ্যে বুঝে গেছেন,
falling wedge-এর ক্ষেত্রে স্টপ লস বসানোর নিয়মও প্রায় একই রকম।
মানে,
- Falling wedge-এ ট্রেড নেওয়া হলে স্টপ লস বসানো হয় শেষ সুইং লো-এর নিচে,
- ঠিক যেমন rising wedge-এ স্টপ লস বসানো হয় শেষ সুইং হাই-এর উপরে।
এইভাবে স্টপ লস নির্ধারণ করলে আপনি বুঝতে পারবেন, কখন আপনার ট্রেডিং সেটআপ অকার্যকর (invalid) হয়ে গেছে এবং তখন আপনি ট্রেড থেকে বেরিয়ে আসবেন।
এই নিয়ম রিস্ক ম্যানেজমেন্টে ডিসিপ্লিন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আবারও দেখুন, আমাদের স্টপ লস কৌশলগতভাবে (strategically) বসানো হয়েছে।
যদি বাজার আমাদের স্টপ লস হিট করে, তাহলে তার মানে হলো একটি নতুন লো তৈরি হয়েছে,
যা আমাদের ট্রেডিং সেটআপটিকে অকার্যকর (invalidate) করে তোলে।
তবে এখানে একটি ব্যতিক্রম রয়েছে—
যদি রিটেস্ট চলাকালীন সময়ে আমরা কোনো bullish বা bearish প্রাইস অ্যাকশন পাই (যেমন: একটি pin bar),
তাহলে আমরা স্টপ লসটি pin bar-এর টেইলের বাইরে বসাতে পারি।
নিচের চিত্রে এটির একটি উদাহরণ রয়েছে—
যেখানে pin bar-এর লম্বা টেইলের বাইরে স্টপ লস রাখা হয়েছে,
যাতে false breakout বা হঠাৎ volatility থেকেও ট্রেড সুরক্ষিত থাকে।
এই কৌশলটি ব্যবহার করলে আপনি প্রাইস অ্যাকশনের সাথে আরও ভালভাবে খাপ খাইয়ে
নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
উপরের চিত্রে আমরা দেখতে পাই, একটি bearish pin bar তৈরি হয়েছে, যা পুরোনো সাপোর্ট লেভেল রিটেস্ট করে এখন নতুন রেজিস্ট্যান্স হিসেবে কাজ করছে।
এই পিন বারটি আমাদের জন্য একটি নতুন সুইং হাই তৈরি করেছে,
যার পেছনে আমরা আমাদের স্টপ লস “লুকিয়ে” রাখতে পারি,
যাতে সেটআপটি আরও নিরাপদ হয়।
আপনি যেই স্টপ লস কৌশলই ব্যবহার করুন না কেন, মনে রাখবেন:
স্টপ লস সবসময় এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে পৌঁছালে সেটআপটি অকার্যকর (invalidate) হয়ে যায়।
🟢 লাভ তোলা: ভাবার চেয়েও সহজ!
এখন চলুন আসল মজার জায়গায় আসি – লাভ নেওয়া (taking profit)।
Rising এবং falling wedge প্যাটার্নগুলো আপনাকে খুব সহজেই support এবং resistance এর জায়গা চিনতে সাহায্য করে।
এর কারণ হলো, এই প্যাটার্নগুলো তৈরি হয় একটি ধাপে ধাপে ওঠা বা নামার স্টাইল অর্থাৎ:
- Higher high এবং higher low (rising wedge)
- অথবা
- Lower high এবং lower low (falling wedge) এর মাধ্যমে।
এখন চলুন, rising wedge দিয়ে উদাহরণ দেখা যাক।
(চিত্রে সাধারণত wedge লাইন এবং টার্গেট সাপোর্ট জোন দেখানো হয়)
এই ধরনের প্যাটার্নে,
আপনার প্রথম টেক প্রফিট লেভেল সাধারণত সেই লো পয়েন্ট হয় যেখানে বাজার আগেরবার সাপোর্ট পেয়েছিল।
এভাবে, আপনি সহজেই ধাপে ধাপে লাভ তোলা শিখতে পারবেন wedge প্যাটার্ন থেকে।
লক্ষ্য করুন, কীভাবে আমরা প্রতিটি সুইং লো (swing low) ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট লেভেল নির্ধারণ করছি।
এই লেভেলগুলো একটি শর্ট ট্রেড সেটআপে লাভ তোলার (take profit) জন্য দুর্দান্ত প্রাথমিক নির্দেশক হিসেবে কাজ করে।
একই ধারণা আমরা falling wedge-এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারি,
যেখানে প্রতিটি সুইং হাই (swing high) হয়ে ওঠে সম্ভাব্য রেজিস্ট্যান্স লেভেল —
এবং সেগুলো হয়ে যেতে পারে লং ট্রেডে লাভ তোলার জায়গা।
সারসংক্ষেপে:
- Rising wedge → সুইং লো গুলো লক্ষ্য করুন → সেগুলো সাপোর্ট → শর্ট ট্রেডে প্রফিট লেভেল
- Falling wedge → সুইং হাই গুলো লক্ষ্য করুন → সেগুলো রেজিস্ট্যান্স → লং ট্রেডে প্রফিট লেভেল
এইভাবে আপনি wedge প্যাটার্নের মাধ্যমে লাভ তোলার সুনির্দিষ্ট জায়গা সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন।
মনে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, যদিও সুইং লো এবং সুইং হাই-গুলো সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স খুঁজে বের করার জন্য আদর্শ জায়গা, তবে প্রত্যেকটি প্যাটার্ন আলাদা হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেভেল এই সুইং পয়েন্টগুলোর সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যেতে পারে, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্যও দেখা দিতে পারে।
🧭 এজন্যই সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল সঠিকভাবে আঁকতে শেখা এতটা গুরুত্বপূর্ণ,
যে প্যাটার্ন বা স্ট্র্যাটেজিই আপনি ট্রেড করুন না কেন।
📌 একটি প্যাটার্নের ভেতরে আরেকটি প্যাটার্ন!
এখন আমি আপনাকে একটি ছোট্ট গোপন তথ্য দিচ্ছি।
Rising এবং falling wedge প্যাটার্ন প্রায়ই এমন একটি আরও পরিচিত রিভার্সাল প্যাটার্ন তৈরি করে,
যেটা আপনি উপরের চিত্রগুলোতেও লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন।
আপনি কি অনুমান করতে পারেন সেটা কী?
আমি যেটা বোঝাতে চাচ্ছি সেটি হলো —
👉 Head and Shoulders প্যাটার্ন।
আর নিচের উদাহরণে যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা হলো —
👉 Inverse Head and Shoulders প্যাটার্ন।
এই দুটি প্যাটার্নও বাজারে ট্রেন্ড রিভার্সালের গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয় এবং wedge প্যাটার্ন থেকে এগুলোর সৃষ্টি হওয়াটা মোটেই বিরল নয়।
বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায়, wedge-এর সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স ব্রেক হওয়ার ফলে
এই দ্বিতীয় রিভার্সাল প্যাটার্নটি (head and shoulders বা inverse) তৈরি হয়।
এই বিষয়টি আপনাকে ট্রেড করার ক্ষেত্রে আরও বিকল্প দেয় —
বিশেষ করে এন্ট্রি নেওয়ার কৌশল এবং স্টপ লস কোথায় বসাবেন সেই দিক থেকে।
👉 Head and Shoulders এবং Inverse Head and Shoulders প্যাটার্নের উপর আলাদা পাঠ (lesson) রয়েছে —
আপনি চাইলে সেগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও চার্ট বিশ্লেষণ দেখতে পারেন।
🎯 ইউরো/ইউএসডি (EURUSD) থেকে একটি শিক্ষণীয় উদাহরণ
এই পাঠের (lesson) শেষ অংশে আমরা একটি rising wedge প্যাটার্নের দিকে নজর দিই যা EURUSD চার্টে গঠিত হয়েছিল।
এই wedge-এর ব্রেকআউট ঘটে নিচের দিকে —
আর তার ফলে বাজারে তৈরি হয় ৩,০০০ পিপসের বেশি পতন!
এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ট্রেড হওয়া কারেন্সি পেয়ার —
তাই এই ধরনের বিশাল মুভমেন্ট wedge প্যাটার্নের গুরুত্বকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরে।
উপরের চার্টে দেখা যাচ্ছে একটি বড়সড় Rising Wedge প্যাটার্ন,
যেটি EURUSD-এর ডেইলি টাইম ফ্রেমে প্রায় দশ মাসব্যাপী গঠিত হয়েছে।
এই নির্দিষ্ট প্যাটার্ন সম্পর্কে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখযোগ্য:
১) টাইম ফ্রেম গুরুত্বপূর্ণ (Time Frame Matters)
আপনি কি মনে রাখছেন, আগেই বলেছিলাম —
আপনার ব্যবহৃত টাইম ফ্রেম নির্ভর করে সেই টাইম ফ্রেমটির উপর,
যেটি সবচেয়ে ভালোভাবে সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেলকে সম্মান করছে।
মানে, যদি আপনি দেখতে পান যে ডেইলি টাইম ফ্রেমে wedge প্যাটার্নটি পরিষ্কারভাবে গঠিত হয়েছে এবং প্রাইস অ্যাকশন সেই লেভেলগুলোকে সম্মান করছে —
তাহলে ট্রেডিংয়ের জন্য ডেইলি চার্টই ব্যবহার করা উচিত।
ছোট টাইম ফ্রেমে অনেক “noise” থাকতে পারে,
কিন্তু বড় টাইম ফ্রেমগুলো (Daily, Weekly) সাধারণত বেশি নির্ভরযোগ্য এবং শক্তিশালী ব্রেকআউট প্রদান করে।
উপরের ৪-ঘণ্টার চার্টটি দেখায় কেন আমাদের এই ট্রেডটি ডেইলি টাইম ফ্রেমে করা প্রয়োজন।
খেয়াল করুন, মার্কেট ইন্ট্রাডে (অর্থাৎ দিনের মধ্যেই) রেজিস্ট্যান্স লেভেলের উপরে ব্রেক করে ফেলেছিল,
কিন্তু ডেইলি টাইম ফ্রেমে সেই ব্রেকআউট মাত্র একটি উইক (wick) হিসেবেই দেখা যাচ্ছে।
🔎 এটি প্রমাণ করে যে এই নির্দিষ্ট wedge প্যাটার্নে ট্রেড করার জন্য ডেইলি টাইম ফ্রেমই সবচেয়ে উপযুক্ত।
ছোট টাইম ফ্রেমে অনেক “ফেক আউট” হয় — যা ডেইলি চার্টে স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে না।
২) ব্রেক হওয়ার পরপরই রিটেস্ট (Immediate Retest of the Broken Level)
দশটির মধ্যে নয়টি ক্ষেত্রেই মার্কেট ভাঙা লেভেলটিকে (broken level) আবার রিটেস্ট করে।
তবে, এটাও মনে রাখতে হবে যে,
রিটেস্ট মানেই সবসময় গোলাকার (rounded) বা ধীর গতির রিটেস্ট হবে না।
অনেক সময় ব্রেক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত রিটেস্ট হয়ে যায় —
এবং এরপরে তৎক্ষণাৎ মার্কেট নতুন দিকের দিকে মুভ করে।
এই কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং চার্টে সঠিক লেভেলগুলো চিহ্নিত করা ট্রেডারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপরের চার্টে লক্ষ্য করুন, EURUSD ব্রেক করার পরপরই আগের ওয়েজ সাপোর্টকে নতুন রেজিস্ট্যান্স হিসেবে টেস্ট করেছে।
এটি সাধারণত ঘটে এমন মার্কেটে যেখানে বিক্রয়ের চাপ (selling pressure) অনেক বেশি থাকে,
অর্থাৎ বিয়াররা (bears) নিয়ন্ত্রণ নেয় ঠিক তখনই যখন সাপোর্ট ভেঙে যায়।
একইভাবে, ফলিং ওয়েজে (falling wedge) যদি বায়িং প্রেসার (ক্রয়ের চাপ) প্রবল থাকে,
তাহলে ব্রেক করার পর নতুন সাপোর্ট হিসেবে আগের রেজিস্ট্যান্স রিটেস্ট করে।
সারসংক্ষেপ (In Summary)
আপনি ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন যে rising ও falling wedge ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে
একটি নির্দিষ্ট ফর্মুলা সবসময় প্রযোজ্য হয় না।
তবে, উপরের নিয়ম এবং কনসেপ্ট অনুসরণ করলে এই breakout গুলো অনেক লাভজনক (profitable) হতে পারে।
🔑 গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহ:
- ✅ Rising wedge সাধারণত একটি টপিং প্যাটার্ন, যেখানে মার্কেট উপরে উঠার পরে নিচে নেমে যায়।
- ✅ Falling wedge সাধারণত একটি বটমিং প্যাটার্ন, যা পরবর্তীতে বুলিশ ব্রেকআউট দিতে পারে।
- ✅ ট্রেডেবল প্যাটার্ন হতে হলে, ওয়েজের প্রতিটি পাশে অন্তত ৩টি টাচ থাকা আবশ্যক।
- ✅ কোন টাইমফ্রেমে ট্রেড করবেন তা নির্ভর করে, কোন টাইমফ্রেমে সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে।
- ✅ ব্রেকআউট নিশ্চিত হয়, যখন মার্কেট রাইজিং ওয়েজে সাপোর্ট নিচে ভাঙে, এবং ফলিং ওয়েজে রেজিস্ট্যান্স উপরে ভাঙে।
- ✅ এন্ট্রি নেওয়া হয় ভাঙা লেভেলকে পুনরায় রিটেস্ট করার পর — কখনো তা তাৎক্ষণিক হয়, কখনো ধীরে ধীরে।
- ✅ স্টপ লস সাধারণত দেওয়া হয় শেষ সুইং হাই বা লো’র ওপরে বা নিচে, যাতে সেটআপ ইনভ্যালিড হলে ট্রেড বন্ধ হয়ে যায়।
- ✅ প্রফিট টার্গেট নির্ধারণ করা হয় সাম্প্রতিক সুইং লো বা হাই অনুসারে।
- ✅ অনেক সময় রাইজিং বা ফলিং ওয়েজের ব্রেক হেড অ্যান্ড শোল্ডার বা ইনভার্স হেড অ্যান্ড শোল্ডার গঠনের সুযোগ তৈরি করে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs):
🔹 Falling বা Descending Wedge কী?
একটি টেকনিক্যাল প্যাটার্ন যেখানে প্রাইস ধীরে ধীরে নিচের দিকে সরু হয়।
এটি সাধারণত একটি বটমিং বা রিভার্সাল সিগন্যাল হিসেবে কাজ করে।
🔹 Rising বা Ascending Wedge কী?
একটি প্যাটার্ন যেখানে প্রাইস উপরের দিকে সরু হয়।
এটি সাধারণত একটি টপিং বা রিভার্সাল সিগন্যাল দেয়।
🔹 ফরেক্সে ওয়েজ প্যাটার্ন কি লাভজনক?
হ্যাঁ, সঠিকভাবে ট্রেড করা হলে ওয়েজ প্যাটার্ন অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও লাভজনক হতে পারে।
🔹 আমি কিভাবে ওয়েজ ট্রেড করবো?
১. প্রথমে ৪-ঘণ্টা বা ডেইলি টাইমফ্রেমে যান
২. একটি ট্রেন্ডিং মার্কেট নির্বাচন করুন (আপ ট্রেন্ড বা ডাউন ট্রেন্ড)
৩. দেখুন প্যাটার্নটি ওয়েজের মতো কিনা (এই পোস্টে আলোচনা করা নিয়ম অনুযায়ী)
About me
আমি Manas Dhali ২০১০ সাল থেকে একজন পেশাদার ফরেক্স ট্রেডার এবং প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছি। ফরেক্স মার্কেটে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বিভিন্ন মার্কেট কন্ডিশনে সফলভাবে ট্রেড করার কৌশল রপ্ত করেছি এবং তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছি।
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমি শত শত শিক্ষার্থীকে ফরেক্স ট্রেডিংয়ের বেসিক থেকে শুরু করে অ্যাডভান্স লেভেল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আমার লক্ষ্য শুধু ট্রেডিং শেখানো নয়, বরং শিক্ষার্থীদের সঠিক মানসিকতা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একজন দক্ষ এবং আত্মবিশ্বাসী ট্রেডার হিসেবে গড়ে তোলা।
ফরেক্স ট্রেডিং আমার জন্য শুধুমাত্র একটি পেশা নয়, এটি আমার আবেগ ও জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমি বিশ্বাস করি, যথাযথ জ্ঞান ও ধৈর্য থাকলে যে কেউই এই মার্কেটে সাফল্য অর্জন করতে পারে।
Manas Dhali
Founder of Forex02Hero