ফরেক্সে ট্রেন্ডের শক্তি নির্ধারণ করার ৩টি শক্তিশালী কৌশল
প্রতিটি ট্রেডারই চায় ট্রেন্ড কীভাবে শনাক্ত করতে হয় এবং তার আপেক্ষিক শক্তি কীভাবে নির্ধারণ করতে হয় তা জানতে। কারণ এটি আমাদেরকে ট্রেন্ডের বিপরীতে নয়, বরং ট্রেন্ডের দিকেই ট্রেড করতে সহায়তা করে — যা ভালো ফলাফলের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
দুঃখজনকভাবে, একটি ট্রেন্ডের শক্তি মাপা যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে বিষয়টি ততটা সরল নয়।
আসলে, গত কয়েক দশকে যেভাবে অসংখ্য ইনডিকেটর ও জটিল কৌশল বাজারে এসেছে, তা একটি সাধারণ বিষয়কে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জটিল করে তুলেছে।
তবে, সরল ভাষায় বললে — হ্যাঁ, এটি একটি সহজ কাজ। কিন্তু সহজে করা যায় কি না, তা নির্ভর করে আপনি কোন কৌশল ও টুলস ব্যবহার করছেন তার উপর।
আজ আমি আপনাকে তিনটি খুব সহজ কৌশল দেখাব, যা যথেষ্ট অনুশীলন করলে ট্রেন্ডের শক্তি নির্ধারণ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এই পাঠ শেষ করার পর আপনি ট্রেন্ডের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন এবং জানতে পারবেন কখন বর্তমান ট্রেন্ড অব্যাহত থাকবে এবং কখন তা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলুন শুরু করা যাক!
ট্রেন্ডিং মার্কেট কী?
প্রথমেই, আমাদের জানতে হবে কীভাবে একটি ট্রেন্ডিং মার্কেট চিহ্নিত করা যায়। বছরের পর বছর ট্রেডাররা এই বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছেন, কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এটি খুবই সহজ।
একটি ট্রেন্ডিং মার্কেট হল সেই মার্কেট, যা উচ্চতর শিখর তৈরি করছে তার পর উচ্চতর নিম্ন তৈরি করছে, অথবা নিম্নতর নিম্ন তৈরি করার পরে নিম্নতর শিখর তৈরি করছে।
এটাই হলো।
যদি আমরা এই বিবৃতিকে চাক্ষুষ রূপে রূপান্তর করি, তাহলে আমরা নিম্নলিখিত চিত্রটি পাই।
একেবারেই বেসিক বিষয়, তাই না?
আমিও তাই ভেবেছিলাম!
কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যে higher highs, higher lows ইত্যাদি সম্পর্কে আপনি সব জানেন বলে চলে যাচ্ছেন, তাহলে থেমে যান। কারণ এই পাঠের পরবর্তী অংশে এমন কিছু ধারণা আছে যা আপনার কাছে নতুন হতে পারে। আসলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি, ৯০% ফরেক্স ট্রেডারই জানেন না কী খুঁজে দেখতে হয় আমি যা এখন দেখাতে যাচ্ছি।
অর্থাৎ, আপনি চাইলে এখানেই না থেমে থাকতে পারেন।
এখন আসছে মজার অংশ – এই সাধারণ highs এবং lows এর ধারণাকে কীভাবে কার্যকর ট্রেডিং তথ্য-তে রূপান্তর করা যায়।
এর জন্য আমরা ফিরি টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের সবচেয়ে মৌলিক নীতিতে।
১: মার্কেটের হাই এবং লোই বলে দেয় আসল গল্প
চলুন শুরু করি চার্টে সময়ের সাথে সাথে হাই এবং লো কোথায় তৈরি হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে। সংক্ষেপে, সময়ের সাথে সাথে যেভাবে মার্কেটের হাই এবং লো গুলো তৈরি হয়, তাদের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করাই এই টেকনিকের মূল কথা।
এই পদ্ধতিতে আমরা শুধুমাত্র লক্ষ্য করি একটি ট্রেন্ডের মধ্যে এক্সটেন্ডেড সুইং হাই এবং সুইং লো গুলো কোথায় তৈরি হয়েছে।
নীচের GBPUSD ডেইলি চার্টটি একটি নিখুঁত উদাহরণ যেখানে শুধু মার্কেটের হাই ও লো-এর আচরণ পর্যবেক্ষণ করেই বোঝা যায় ট্রেন্ড পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না।
লক্ষ করুন, কিভাবে কয়েক মাস জুড়ে GBPUSD এক ধরণের রাউন্ডিং টপ গঠন করেছে, যা একটি বৈধ টেকনিক্যাল প্যাটার্ন। তবে, এই পাঠের জন্য আমরা কেবলমাত্র সুইং হাই ও লো ব্যবহার করে ট্রেন্ড পরিবর্তনের সম্ভাব্য সংকেত খুঁজে দেখবো।
উপরের চার্টে, প্রথম লোয়ার হাই ছিল সেই প্রথম সংকেত যে আপট্রেন্ড ক্লান্ত হতে শুরু করেছে। তবে প্রথম লোয়ার লো আসার পরই স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে বিদ্যমান ট্রেন্ডটি রিভার্স হয়েছে।
মনে রাখবেন, ট্রেন্ড পরিবর্তনের লক্ষণ সব সময় এতো স্পষ্ট নাও হতে পারে। তবে কিছু না কিছু ইঙ্গিত থাকে—সেগুলো খুঁজে পেতে হয়তো একটু গভীরভাবে দেখতে হবে।
এখন আপনি ভাবতে পারেন, “এই সব তো ঠিক আছে, কিন্তু তাহলে শর্ট এন্ট্রি কোথা থেকে নেবো?”
এর জন্য আমাদের সুইং হাই ও লো-এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ লেভেল-এর মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন, যা একটি ভাল ট্রেড সেটআপ তৈরি করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, আপনাকে চার্টে দেখা প্রাইস অ্যাকশনকে কার্যকর সিদ্ধান্তে রূপান্তর করতে হবে।
২: রিটেস্টের দূরত্ব – ট্রেন্ডের শক্তি নির্ধারণের একটি অসাধারণ কৌশল
আমরা যখন সুইং হাই ও লো ব্যবহার করে ট্রেন্ডের শক্তি বিশ্লেষণ করছিলাম, তখন এখন সেই বিশ্লেষণে একটি কী লেভেল যুক্ত করবো।
ট্রেডারদের মধ্যে একটি সাধারণ (এবং ক্ষতিকর) ভুল ধারণা রয়েছে: কেউ একসময় বলেছিল যে, একটি সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স লেভেল যতবার রিটেস্ট হবে, সেটি ততটা শক্তিশালী হবে।
আমার খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে—এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
একটি লেভেল যত বেশি রিটেস্ট হবে, সেটা ততটা দৃশ্যমান (visible) হবে, কিন্তু তা শক্তিশালী (stronger) হবে না।
এবং “দৃশ্যমান” আর “শক্তিশালী”—এই দুইটি শব্দ কিন্তু এক নয়।
একবার ভাবুন তো, যদি এই তত্ত্ব সত্য হত—যে একটি লেভেল বারবার রিটেস্ট হলেই সেটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে—তাহলে সেটি কোনোদিনই ব্রেক হতো না! কারণ, যদি তৃতীয় রিটেস্টে লেভেল ব্রেক না করে, তাহলে ষষ্ঠবারে তা দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে কেন ব্রেক করবে?
এই হিসাবে গলদ আছে।
তাহলে আমরা যদি ধরে নিই যে বারবার রিটেস্ট কোনো লেভেলকে শক্তিশালী করে না, তাহলে কি আমরা বলতে পারি এটি সেটিকে দুর্বল করে?
পুরোপুরি না। যদিও একটি মার্কেট যদি বারবার একই এলাকায় ফিরে আসে, তবে সেটা শেষ পর্যন্ত সেই লেভেল ভেঙে ফেলতে পারে, তবে এটি সবসময় নিশ্চয়তা দেয় না।
এই বিষয়টি বোঝার জন্য আবারও আমরা ফিরবো সুইং হাই ও লো-এর দিকে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, হাই ও লো কীভাবে আমাদের কি লেভেল-এর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
নীচের উদাহরণে একটি ট্রেন্ডিং মার্কেট দেখানো হয়েছে যেটি একটি ট্রেন্ড লাইন সম্মান করছে। তবে লক্ষ্য করুন, সময়ের সাথে সাথে প্রতিটি রিটেস্টের দূরত্ব কমে যাচ্ছে।
লক্ষ করুন, কীভাবে বাজারটি এই লেভেলটিকে সাপোর্ট হিসেবে চারবার আলাদাভাবে টেস্ট করেছে এর শুরু থেকে। তবে, যেটা অনেক ট্রেডার উপেক্ষা করে বসেন, তা হলো—প্রতিটি রিটেস্টের মধ্যকার সময়ের ব্যবধান ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যতই ট্রেন্ড উপরের দিকে এগোচ্ছে।
এই ধরনের প্রাইস অ্যাকশনের সম্ভাব্য ফলাফল সাধারণত নিম্নরূপ হয়:
একটি দুর্বলতা সংকেত, যা ইঙ্গিত দেয় যে ট্রেন্ডটি ক্লান্ত হচ্ছে এবং হয়তো শিগগিরই একটি ব্রেকডাউন বা ট্রেন্ড রিভার্সাল ঘটতে পারে।
সাধারণত, যখন রিটেস্টের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ে কিন্তু নতুন হাই তৈরি হয় না, তখন সেটা ট্রেন্ডের শক্তি হ্রাস পাওয়ার একটি স্পষ্ট লক্ষণ।
কেন এমনটি ঘটে?
সংক্ষেপে বললে, এটি বাজারের পক্ষ থেকে একটি সংকেত যে চাহিদা (demand) কমে আসছে। সাপ্লাই এবং ডিমান্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে বললে—যখন দাম বাড়তে থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই চাহিদা হ্রাস পায়, কারণ ট্রেডাররা উচ্চ মূল্যে কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
একই সময়ে, সরবরাহ (supply) বৃদ্ধি পায় কারণ বাজার অংশগ্রহণকারীরা লাভ তুলে নিতে তাদের পজিশন বন্ধ করতে শুরু করে।
উপরের উদাহরণগুলোর ক্ষেত্রে, ট্রেন্ড লাইন সাপোর্ট থেকে প্রতি র্যালির পর চাহিদা আরও দ্রুত কমে যাচ্ছে। ফলে আমরা দেখতে পাই বাজারটি নতুন হাই তৈরি করার চেয়ে সাপোর্ট ধরে রাখার জন্য বেশি সময় ব্যয় করছে।
অবশ্যই, এই ধারণাটি বিয়ারিশ ট্রেন্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেখানে দাম কমার সাথে সাথে চাহিদা বাড়ে এবং সরবরাহ কমে।
নীচের EURUSD ডেইলি চার্টটি একটি বাস্তব উদাহরণ, যেখানে দেখা যায় কীভাবে একটি কারেন্সি পেয়ারের সাপোর্ট লেভেল ক্রমান্বয়ে কম সময় ব্যবধানে বারবার টেস্ট হয়েছে ২৫৬ দিনের মধ্যে।
লক্ষ করুন কীভাবে প্রতিটি র্যালি আগের তুলনায় কম সময় সাপোর্ট লেভেলের বাইরে কাটিয়েছে, যতই ট্রেন্ডটি দীর্ঘায়িত হয়েছে।
আমরা সবাই জানি এরপর কী ঘটেছিল। উপরের চার্টে আপনি যে ব্রেকডাউনটি দেখছেন, সেটিই ছিল শুরু — যার ফলে পরবর্তী ৪৪ সপ্তাহে প্রায় ৩,৩০০ পিপস পর্যন্ত একটি বিশাল পতন ঘটে।
আমরা যদি এটিকে আরও নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করতে চাই, তাহলে আমরা উপরের দুটি কৌশল একত্রে ব্যবহার করতে পারি—যাতে করে এই ধারণাকে আরও জোরালো করা যায় যে ব্রেকডাউনটি আসন্ন ছিল।
আমি প্রথমেই স্বীকার করি যে, টেকনিক্যাল ব্রেকের আগে পেয়ারটি (মুদ্রাজোড়া) Lower High তৈরি করেনি। তবে, একটি Rising Wedge গঠিত হওয়াই এটা প্রমাণ করে যে প্রতিটি পরবর্তী র্যালিতে আগের চেয়ে কম বুলিশ জোর ছিল।
৩: ক্লাস্টারিং প্রাইস অ্যাকশন একটি প্রাথমিক সতর্ক সংকেত
সবশেষে যে কৌশলটি রয়েছে, তা হলো — যখন প্রাইস অ্যাকশন কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেভেলের কাছে ক্লাস্টার করতে শুরু করে। এক অর্থে, এটি আগের আলোচনা করা দুটি কৌশলেরই একটি মিশ্রণ।
আমি এটি প্রায়ই “হেভি প্রাইস অ্যাকশন” বলে থাকি। আমার সদস্যরা এই টার্মটির সাথে বছরের পর বছর ধরে পরিচিত।
“হেভি” প্রাইস অ্যাকশন শব্দটির অর্থই হচ্ছে, যখন একটি মার্কেট কম সময়ের মধ্যে একটি কী লেভেলের ওপর বারবার চাপ সৃষ্টি করে।
আমার আসলে শব্দটির জন্য একটি আরও উপযুক্ত বিকল্প ভাবা উচিত — কারণ “হেভি” মূলত সেই পরিস্থিতির জন্যই প্রযোজ্য যখন মার্কেট সাপোর্ট লেভেলে চাপ দিচ্ছে। বিপরীত দিকে হলে (অর্থাৎ রেজিস্ট্যান্সে চাপ পড়লে), তাহলে হয়তো “লাইট” প্রাইস অ্যাকশন বলা যেত — কিন্তু সেটা ঠিক মানানসই শোনায় না।
(এই অংশটি আমার ভবিষ্যতের সদস্যদের আলোচনার জন্য রেখে দিচ্ছি।)
যাই হোক, মূল বিষয় হলো — লক্ষ্য রাখা, মার্কেট কীভাবে একটি সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স লেভেলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
এই নির্দিষ্ট সময়সীমা হতে পারে কয়েক দিন, বা আপনি যদি ডেইলি টাইম ফ্রেমে ট্রেড করেন, তাহলে পুরো একটি সপ্তাহও হতে পারে।
যদি দেখা যায় মার্কেট একটি কী লেভেলের আশেপাশে দীর্ঘ সময় ধরে ঘোরাঘুরি বা ক্লাস্টার করছে, তাহলে খুব সম্ভবত সেই ট্রেন্ডটি ব্রেক ডাউন করতে যাচ্ছে এবং রিভার্স (বিপরীত দিকে) হতে পারে।
নিচের চিত্রটি একটি আপট্রেন্ড মার্কেটে এই ধরণের ক্লাস্টারিং প্রাইস অ্যাকশন কেমন দেখতে হতে পারে, তা প্রদর্শন করে।
উপরের ট্রেন্ডের শেষের দিকে লক্ষ্য করুন, কীভাবে মার্কেট সাপোর্ট লেভেলের ঠিক ওপরে ক্লাস্টার করতে শুরু করেছে। এই ধরনের প্রাইস অ্যাকশন বেশিরভাগ সময়েই ব্রেকডাউনের দিকে নিয়ে যায়।
নিচের AUDJPY সাপ্তাহিক (weekly) চার্ট একটি নিখুঁত উদাহরণ হিসেবে কাজ করে।
আমি বলতে পারব না কতবার আমি এটি গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট লেভেলে ঘটতে দেখেছি। দুর্ভাগ্যবশত, যারা এই বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেয়নি, তারা ঠিক তখনই ট্রেন্ডের দিকেই এন্ট্রি নেয় যখন সেটি ভেঙে পড়ার (breakdown) মুখে থাকে।
তবে ভুল করে ভাববেন না যে এই টেকনিক শুধু সাপ্তাহিক (weekly) চার্টেই কার্যকর। আসলে এটি যেকোনো টাইমফ্রেমেই — এমনকি ১ ঘণ্টার চার্টেও — অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে কাজ করতে পারে।
আবার লক্ষ্য করুন, কীভাবে চ্যানেলের শেষ দিকে প্রাইস অ্যাকশন “হেভি” হয়ে উঠেছিল, যা স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছিল যে বুলিশ গতি (momentum) শুধু ক্লান্তই হচ্ছিল না, বরং একটি ব্রেক (break) যে আসন্ন তা পরিষ্কার ছিল।
নিচের AUDUSD ৪-ঘণ্টার চার্টটি পরবর্তী পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে। উপরের চার্টে যে ব্রেকডাউন ঘটেছিল, তার ফলাফল ছিল পরবর্তী ৩০টি ট্রেডিং দিনে ৬৮০ পিপসের ক্ষতি।
যদিও কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স লেভেলের উপরে বা নিচে ক্লোজ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করাটা এখনও প্রয়োজন, ক্লাস্টারিং প্রাইস অ্যাকশন কীভাবে একটি ব্রেকডাউনের দিকে নিয়ে যেতে পারে তা বোঝা আপনাকে ভুল দিকে ট্রেড করা থেকে রক্ষা করতে পারে।
চূড়ান্ত ভাবনা
একটি ট্রেন্ডের শক্তিমত্তা নির্ধারণ করা কোনো জটিল প্রক্রিয়া হওয়া উচিত নয়। উপরে আলোচনা করা তিনটি সহজ টেকনিকই যথেষ্ট, যাতে আপনি বুঝতে পারেন ট্রেন্ড চালিয়ে যাবে কিনা বা ব্রেক করবে।
মনে রাখবেন, এই তিনটি কৌশল যেমন বুলিশ মার্কেটে কার্যকর, ঠিক তেমনি বেয়ারিশ মার্কেটেও সমানভাবে কার্যকর। এখানে যেসব চার্ট ও প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়েছে, তা শুধুমাত্র ধারাবাহিক ব্যাখ্যার সুবিধার জন্য। কিন্তু এই কৌশলগুলো আপনি যেকোনো মার্কেটে ও যেকোনো টাইম ফ্রেমে প্রয়োগ করতে পারেন।
একজন ট্রেডার হিসেবে আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ট্রেন্ড শক্তি বিশ্লেষণ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ লেভেল চিহ্নিত করার জন্য মূল বিষয়গুলিতে ফিরে যাওয়া। প্রতিটি মার্কেটের একটি গল্প থাকে, আর সেই গল্পটা বোঝা যায় সুইং হাই ও লো-র গঠনের মাধ্যমে।
আমি প্রায়ই বলি, একজন ট্রেডারের কাজ হলো ভবিষ্যতে কী হবে তা জানা নয়। বরং, মার্কেট যে ইঙ্গিতগুলো দেয় তা সংগ্রহ করা এবং সেগুলো এমনভাবে বিশ্লেষণ করা যা আপনাকে সম্ভাব্য সফলতার দিকেই এগিয়ে দেয়। আর এই ইঙ্গিতগুলো সবই মার্কেটের প্রাকৃতিক ওঠানামা থেকে আসে।
বাজার ট্রেন্ড সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি (FAQs)
আর্থিক মার্কেটে ট্রেন্ড কী?
ফরেক্স বা স্টক মার্কেটে একটি ট্রেন্ড মানে হলো নির্দিষ্ট একটি সময়ে মার্কেট উপরের দিকে বা নিচের দিকে চলা। এটি বোঝায় যে, বাজারে ক্রেতারা (আপট্রেন্ড) অথবা বিক্রেতারা (ডাউনট্রেন্ড) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আপনি কীভাবে ট্রেন্ড চিহ্নিত করবেন?
আমার অভিজ্ঞতায়, ট্রেন্ড চিহ্নিত করার সেরা উপায় হলো সহজ প্রাইস অ্যাকশন ব্যবহার করা। উচ্চতর হাই এবং উচ্চতর লো মানে আপট্রেন্ড, আর নিম্নতর হাই এবং নিম্নতর লো মানে ডাউনট্রেন্ড।
ট্রেন্ডের তিনটি ধরণ কী কী?
- দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড (Long-term/Secular): যা ৫ বছর বা তার বেশি স্থায়ী হয়।
- মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড (Intermediate/Primary): যা প্রায় ১ বছর বা তার বেশি স্থায়ী হয়।
- স্বল্পমেয়াদি ট্রেন্ড (Short-term/Secondary): যা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
সেরা ফরেক্স ট্রেন্ড ইন্ডিকেটর কোনটি?
এটি অনেকটাই পার্সোনাল পছন্দের বিষয়। তবে আমার মতে, “র’ প্রাইস অ্যাকশন” বা খাঁটি দামের চলাফেরাই সবচেয়ে কার্যকর। যখন মার্কেটের সুইং হাই ও লো আপনাকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়ে দেয়, তখন অতিরিক্ত ইন্ডিকেটরের প্রয়োজন পড়ে না।
ট্রেন্ড রিভার্সাল কীভাবে চেনা যায়?
যখন কোনো মার্কেট আপট্রেন্ডে (উচ্চতর হাই এবং লো তৈরি করছে) থেকে নিম্নতর হাই ও লো গঠন করতে শুরু করে, তখন বুঝতে হবে এটি রিভার্সাল বা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিপরীতভাবে, কোনো ডাউনট্রেন্ডে মার্কেট যখন উচ্চতর হাই ও লো তৈরি করতে শুরু করে, তখন সেটিও একটি রিভার্সালের লক্ষণ।